ছোটবেলায় দেখা সব চেয়ে ভাল লাগা সিনেমা হলো সত্যজিত রায়ের গুপী গাইন বাঘা বাইন । সিনেমাটার প্রধান আকর্ষণ ছিল ভূতের রাজা এবং গুপী বাঘাকে দেওয়া তিন বর। শুধু ছোটবেলা কেন বড় হয়েও যখুনি সুযোগ পেয়েছি সিনেমাটা দেখেছি এবং আবারো বার বার দেখতে চাই। যতবার দেখি ততবার যেন নতুন করে ভালো লাগে। কি অনবদ্য সৃষ্টি।
আজ দুপুরে ছেলেকে ইউটুবে সিনেমাটা চালিয়ে দিলাম, ভাবলাম যদি দেখে একটু মজা পায়ে। দেখলাম সেই ভূতের রাজার গানটাই সব চেয়ে বেশি আকর্ষণ করলো এবং তার পর থেকেই ওই গানটাই বার বার শুনতে চাইছে। আমার দেখে খুব মজা লাগলো আর তখুনি মনে হলো আচ্ছা যদি আমিও ভূতের রাজার দেখা পেতাম আর যদি সে আমাকে তিনটে বর দিতে চাইত তাহলে আমি কি কি চাইতাম।
প্রথমেই চাইতাম এমন এক ক্ষমতা যার ফলে আমি যখন খুশি যেন অতীতে চলে যেতে পারি। বলা ভালো এক ধরনের টাইম মেশিন। অতীত মানে আমার জীবনেরই আগের বছর গুলো নয়, যেন চলে যেতে পারি যেকোনো সভ্যতার যুগে। তা সে মহেঞ্জদর হরপ্পা ও হতে পারে, মুঘল যুগ ও হতে পারে আবার সম্রাট অশোকের রাজ্যও হতে পারে। ছোটবেলায় ইতিহাস বিষয়টা স্কুলএ কখনই ভালো লাগত না কারণ এত তারিখ আর নাম মনে রাখতে হত। কিন্তু বড় হয়ে কেন জানিনা ইতিহাসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে গেছে । এখন সময় সুযোগ পেলেই ইতিহাস নিয়ে পড়তে ভালো লাগে, ভীষণ ইচ্ছে করে সেই সময় টাকে নিজের চোখে দেখতে। তাই ভূতের রাজার প্রথম বর আমি এটাই চাই। যখন খুশি যেমন যেতে পারি তেমন যখন খুশি যেন ফিরেও আসতে পারি। দেখতে চাই তখনকার মানুষজন কেমন ছিল, কেমন ছিল তাদের সাজ পোষাক, খাওয়া দাওয়া এবং একে অপরের সঙ্গে ওঠাবসা । বই এর পাতায় বা ইন্টারনেট এ হয়ত এ সব কিছু নিয়েই বলা থাকে কিন্তু পড়ে যত না সুখ নিজের চোখে দেখার মজাই আলাদা । টেলিভিশন , মোবাইল, ইন্টারনেট বা যেকোনো রোজকার সুবিধাজনক ব্যবর্হিত যন্ত্র ছাড়াও যে মানুষ জীবন অতিবাহিত করত সেটা নিজের চোখে দেখতে চাই।
এর পর দ্বিতীয় বর চাইতাম অন্যের মন কে পড়ার ক্ষমতা। যখুনি ইচ্ছে হবে যেকোনো কারুর মন কে যেন পড়ে ফেলতে পারি। সে তখন ঠিক কি ভাবছে, কাকে নিয়ে ভাবছে বা কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত। মানুষের মনকে পড়া সবচেয়ে কঠিন। তাই মনে হয় এমন একটা ক্ষমতা পেলে মন্দ হত না। অনেক মানুষের মুখোশের পিছনে আসল চেহারাটা বেরিয়ে পড়ত। তাহলে হয়ত আগামী দিনে একটু কম ঠকার সম্ভবনা থাকত। তার সঙ্গে এটাও বলি আমার এই ক্ষমতার কথা সামনের জন যেন টের না পায় , নাহলে তো আবার শুরু সেই অভিনয় ।
অবশেষে তৃতীয় বরটি হলো একটা সত্যকে জানা। আর সেটা হলো মানুষ বা যে কোনো প্রাণীর মৃত্যুর পর ঠিক কি ঘটে ? মানুষ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলে তার আত্মার কি হয় ? আদৌ আত্মা বলে কিছু আছে ? সত্যি কি মানুষ মারা গেলে আবার জন্মায়? আর যদিও বা জন্মায় এই মৃত্যু আর জন্মের মাঝের সময়টা সে কোথায় থাকে আর কি ভাবে থাকে?
যদিও পুরো ভাবনা চিন্তাটাই অবাস্তব, তবুও কিছুক্ষণের জন্য ভাবতে বেশ ভালই লাগলো। একমাত্র ভূতের রাজাই পারে তার বরদান দিয়ে আমার এই অবাস্তব ভাবনাকে বাস্তব করতে ।
অন্যে কী ভাবছে সেটা জেনে ফেললে কিন্তু খুব মুশকিল হতে পারে, একটা বিদেশী গল্প ছিল, মপাসা-টপাসা কিছু একটা হবে, যাতে এরকম একটা ব্যাপার হয়, তারপর লোকটাকে শেষমেষ পাগলা গারদে যেতে হয়!
ReplyDeletehahahaaa.......amra sobai to kichuta holeo pagol...amar to mone hoy charidiktai to pagole bhorti ar amra pagla garodei bash korchi :)
ReplyDeletebesh bhalo laglo tor ichhe gulo jene. chotobelate kintu amio tor tritio bortar katha bhabtam. khub ichhe chilo mrityu ke janar.... ei beparta bhishon annyorokom.....
ReplyDeleteBhuter rajar bor chara amader ei ichhe ar keu puron korte parbe na go:-)
Delete