স্কুল জীবনের সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ সময় আমার HS পড়ার সময় । প্রথম যখন ক্লাস্সে যাই তখন একজনকেই চিনতাম মধুমিতা, যাকে নার্সারী থেকে চিনি আর বাকি সব অচেনা। কিন্তু কি ভাবে যেন আরো তিন জন (শর্বরী, রিতপা আর সময়িতা ) র সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি আলাপ পরিচয় হয়ে গেল আর সেই থেকে আমাদের পাঁচ জনের একটা গ্রুপ হয়ে গেল। স্কুল এ ঢোকা থেকে শুরু করে বেরোনো পর্যন্ত এক সাথেই পাঁচ জন কে সব সময় দেখা যেত।
এক সাথে টিফিন শেয়ার করে খাওয়া , এক সাথে ক্লাস্সে পড়া না শুনে বুক ক্রিকেট খেলা থেকে শুরু করে এক সাথে ক্লাস্সে নোটস নেওয়া। অনেক সময় টিফিন এর আগেই আমাদের টিফিন খাওয়া শেষ হয়ে যেত, মানে লুকিয়ে লুকিয়ে ক্লাস চলা কালীন টিফিন খাওয়া , সেটা ছিল সব চেয়ে মজাদার ব্যাপার। পকেট মানি বাঁচিয়ে স্কুল ক্যান্টিন থেকে ফিস ফ্রাই খাওয়া ছিল একটা পিকনিক করার মতন। কত ছোট ছোট ব্যাপারে কত আনন্দ করতাম আমরা।
আমাদের পাঁচ জনের মধ্যে সব চেয়ে শান্ত শিষ্ট ছিল সময়িতা কিন্তু বেচারা আমাদের পাল্লায় পড়ে কম বকুনি খায়নি। একজন বাংলার টিচার ছিলেন উনি ক্লাস্সে এসেই আমাদের পাঁচ জন কে পাঁচ জায়গায় বসিয়ে দিতেন যাতে একে অপরের সঙ্গে কথা না বলতে পারি। কিন্তু তা তে বিশেষ লাভ হত না। আমাদের কোনো কারণ লাগত না হাসির। এক এক দিন এমন হত যে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় বাসে উঠে একা একাই হেসেছি কোনো কথা মনে করে । এত বন্ধুত্ব ভালবাসার মধ্যেও কিন্তু চলত মান অভিমানের পালা, কান্নাকাটি, মাঝে মধ্যেই চলত আমার আর মধুমিতার মধ্যে মন কষাকষি। কিন্তু সে আর কতক্ষণ, হয়ত একটা পিরিয়ড কথা না বলে থাকা বা বাড়িতে গিয়েই একটা ফোন করে sorry বলা । কত সহজেই মিটে যেত আমাদের মধ্যে কলহ গুলো। অন্য কে নিয়ে মজা করায় আমরা ছিলাম ওস্তাদ আর সেই নিয়ে অনকেই কি বিরক্তই না হত। এমন একটা বয়স তখন আমাদের লাইফ এর বিভিন্য বিষয় কি ভীষণ কৌতূহল। কত কত গোপন কথা, jokes share করা , যে গুলো কিনা জোড়ে বলা যাবে না আর তখুনি পাঁচ টা মাথা এক হয়ে যেত. আর তার কিছুক্ষণ পরেই একটা হাসির কলরব শুনত ক্লাস এ সবাই।
সারা বছর আমরা অপেখ্যা করে থাকতাম দূর্গা পুজোয় কবে বেরোব, কি পরবো , কোথায় ঘুরব আর কি খাব। একবার মনে আছে শর্বরী পুজোয় নতুন জুতো পরে বেরিয়ে ঢাকুরিয়া ব্রিজ এর কাছে এমন পড়ল যে আমরা সবাই হুর্মুরিয়ে এক সাথে পরলাম আর তার পরেই শুরু হলো সেই বিকট হাসি সবার। খেয়াল ই করতাম না কে কি ভাবলো কে দেখল। দুটো বছর আমরা চুটিয়ে এক সাথে আনন্দ করেছি, পড়াশুনো করেছি , একে ওপর কে নিয়ে মজা করেছি। এসে গেল ফাইনাল পরিখ্যা। এক সাথে question paper solve করা, অঙ্ক করা আর alternately স্কুল কামাই করে বাড়িতে বসে পড়া। HS পরিখ্যার লাস্ট দিন মনে আছে বাড়িতে থেকে সবার বাবা মা কেই আসতে বারণ করা হয়েছিল কারণ সেদিন plan ছিল স্কুল থেকে বেরিয়ে বন্ধুরা গল্প করতে করতে এক সাথে বাড়ি ফিরব । সামান্য ছোট ব্যাপার গুলো ছিল কি আনন্দ দায়ক। এমনি হয় বোধয় ওই বয়সে। পরিখ্যার পর ঘনিয়ে এলো result এর দিন। কোথায় tension ...আমরা তো সবাই মিলে মধুমিতা র বাড়িতে বসে আড্ডা দিছি কারণ ওর বাড়িটাই ছিল স্কুল এর সব চেয়ে কাছে। ফাইনাল list টাঙানো হয়ে গেছে আমাদের বাবা মা রা সব পৌছে গেছে স্কুল এ কিন্তু আমাদের পাত্তা নেই। হঠাথ আমাদের মধ্যে কে যেন বললো কি রে স্কুল এ জাবি না, result বোধয় বেরিয়ে গেছে । আমরা তাড়াতাড়ি স্কুল এ রওনা দিলাম, পৌছনোর আগেই নিজেদের মার্কস জেনে গেলাম, ভালো হয়েছে সবার ই। তার পর কলেজ এ ভর্তি। আমরা চার জন গেলাম এক কলেজ এ আর সময়িতা অন্য কলেজ এ। খুব মিস করতাম ওকে। Graduation এর পর আমি চলে গেলাম Pune তে law পড়তে , সময়িতা mba , রিতপা ca আর মধুমিতা শর্বরী ভর্তি হলো master degree তে। সবাই career করতে ব্যস্ত। তখন ফোন বা social নেটওয়ার্কিং সাইট ছিল না, কিছু চিঠি আদান প্রদান হয়েছিল আমার বন্ধুদের সঙ্গে। তবে ছুটি তে এলে সবার সঙ্গে দেখা হত, হত না শুধু সময়িতা র সঙ্গে। কোথায় যেন হারিয়ে গেল। তার পর নিজেদের লাইফ নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পরলাম কিছু বছর , কয়েকবার খুঁজেছিলাম orkut এ। বাকি চারজন আমরা contact এ ছিলাম আজ ও আছি।
গত বছর কলকাতায় থাকা কালীন হটাথ দেখলাম ফেসবুক এ সময়িতা নামের একজন আমায় friend request পাঠিয়েছে। sirname টা চেঞ্জ হয়ে গাছে তবে ছবি দেখে চিনতে পারলাম পঞ্চ পান্ডবের সেই হারিয়ে যাওয়া এক পান্ডব দেখা দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল এর নম্বর আদান প্রদান হলো এবং একদিন দেখাও করে ফেললাম। প্রায়ে বারো বছর পর দেখা এবং কথা হচ্ছে , কত কিছু যে বলার আছে, কোথা থেকে শুরু করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না. তবে এত টুকু মনে হয়নি এই বারো বছরের gap টা। মনে হলো যেখানে আমাদের friendship টা ছেড়ে গেছিল সেখানেই রয়েছে। একটু ও uncomfortable বা hesitation হয়নি সব কিছু share করতে। এই এত গুলো বছরে দুজনের জীবনের ঘটে গেছে নানান ঘটনা। দু ঘন্টা সময় খুব কম মনে হয়েছিল সব কিছু বলার জন্য।
আমি এখন ফিনল্যান্ড এর বাসিন্দা রিতপা আছে Hyderabad এ আর বাকিরা কলকাতাতেই। অপেখ্যা করে আছি কবে দেশে গিয়ে আবার সবার সঙ্গে দেখা হবে। এখন আমরা সবাই খুব ব্যস্ত কেউ কর্ম জীবনে কেউ সংসার করতে আবার কেউ বা দুটোই আর আমাদের বন্ধুত্য্ টা facebook আর whatsapp এ বন্দী। But thanks to social networking কারণ এগুলো না থাকলে হয়ত যোগাযোগ রাখাই হত না। আমাদের সেভাবে দেখা করা হয়না রেগুলার কিন্তু আমি নিশ্চিত আমাদের বন্ধুত্য একই জায়গায় রয়েছে। হয়ত পরিস্থিতি বা কাজের চাপে সব সময় খোঁজ নেওয়া হয়ে ওঠেনা কিন্তু আমি জানি চার জন বন্ধু আমার আজ ও আছে যাদের আমি ডাকলেই সারা পাব ।
গত বছর কলকাতায় থাকা কালীন হটাথ দেখলাম ফেসবুক এ সময়িতা নামের একজন আমায় friend request পাঠিয়েছে। sirname টা চেঞ্জ হয়ে গাছে তবে ছবি দেখে চিনতে পারলাম পঞ্চ পান্ডবের সেই হারিয়ে যাওয়া এক পান্ডব দেখা দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল এর নম্বর আদান প্রদান হলো এবং একদিন দেখাও করে ফেললাম। প্রায়ে বারো বছর পর দেখা এবং কথা হচ্ছে , কত কিছু যে বলার আছে, কোথা থেকে শুরু করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না. তবে এত টুকু মনে হয়নি এই বারো বছরের gap টা। মনে হলো যেখানে আমাদের friendship টা ছেড়ে গেছিল সেখানেই রয়েছে। একটু ও uncomfortable বা hesitation হয়নি সব কিছু share করতে। এই এত গুলো বছরে দুজনের জীবনের ঘটে গেছে নানান ঘটনা। দু ঘন্টা সময় খুব কম মনে হয়েছিল সব কিছু বলার জন্য।
আমি এখন ফিনল্যান্ড এর বাসিন্দা রিতপা আছে Hyderabad এ আর বাকিরা কলকাতাতেই। অপেখ্যা করে আছি কবে দেশে গিয়ে আবার সবার সঙ্গে দেখা হবে। এখন আমরা সবাই খুব ব্যস্ত কেউ কর্ম জীবনে কেউ সংসার করতে আবার কেউ বা দুটোই আর আমাদের বন্ধুত্য্ টা facebook আর whatsapp এ বন্দী। But thanks to social networking কারণ এগুলো না থাকলে হয়ত যোগাযোগ রাখাই হত না। আমাদের সেভাবে দেখা করা হয়না রেগুলার কিন্তু আমি নিশ্চিত আমাদের বন্ধুত্য একই জায়গায় রয়েছে। হয়ত পরিস্থিতি বা কাজের চাপে সব সময় খোঁজ নেওয়া হয়ে ওঠেনা কিন্তু আমি জানি চার জন বন্ধু আমার আজ ও আছে যাদের আমি ডাকলেই সারা পাব ।
দ্বিতীয় ইনিংস এর প্রথম পোস্ট? অভিনন্দন। তবে বাংলা ফন্ট টা একটু ঝোলাচ্ছে, আশাকরি পরে ঠিক হয়ে যাবে। খুব সুন্দর লাগলো পড়ে, ছোটবেলার জীবনটা আমিও খুব মিস করি কিনা!
ReplyDeleteekdom jholachhe...ei jemon akhon banglay type tai korte parlam na :( dekha jak kotota improve korte pari !
Delete